করোনাভাইরাস: মৃতের সংখ্যা ১২৯০ জন বাড়ালো চীন

করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা সংশোধন করেছে চীন। উহানে মৃত ১ হাজার ২শ ৯০ জন বেড়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬শ ৩২ জনে। এই পর্যালোচনায় উহানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে গেছে ৫০ শতাংশ। সংশোধন করা হয়েছে আক্রান্তের সংখ্যাও। নতুন ৩২৫ জন যোগ করে উহানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৩৩৩ জন। সবমিলিয়ে পুরো চীনে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮২ হাজার ৬৯২জন। শুক্রবার সকালে উহানের স্থানীয় প্রশাসন নতুন এই তথ্য দেয়।

চারটি কারণে এই তথ্য সংশোধন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতদিন এসব মানুষের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশে বিলম্ব হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে শিনহুয়া। প্রথম কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অনেকেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগেই বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং সেসময় তাদের অনেকেরই টেস্ট করা হয়নি।

সেখানে সংখ্যা বাড়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অনেক রোগী চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতেই মারা গেছেন, যারা এতদিন হিসাবের বাইরে ছিল। রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে হিসাব রাখার ক্ষেত্রেও ভুল থেকে গেছে, যা পর্যালোচনায় সংশোধন করা হয়েছে।

আরেকটি কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মহামারিতে করোনার চিকিৎসা করতে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তাদের অনেকেই কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্ক সঙ্গে যুক্ত হতে পারেনি। ফলে সেখানে আক্রান্ত-মৃতের সংখ্যা পেতে দেরি হয়েছে।

এর মধ্যে শুরুতে উহানে মৃতের সংখ্যা রেকর্ড করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের কিছু ভুল ছিল বলে জানানো হয়েছে। সেইসাথে করোনার সংক্রমণের শুরুর দিকে অনেকে বাড়িতেই মারা যায়। এছাড়া কিছু হাসপাতাল মহামারি তথ্য নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত ছিল না। ফলে সময়মত তারা তথ্য দিতে পারেনি।

যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেকেই করোনাভাইরাস নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রথম থেকেই অভিযোগ করছেন চীনে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা সামনে আনতে চাইছে না শি জিনপিংয়ের প্রশাসন। এরমধ্যেই আজ মৃতের এই নতুন সংখ্যা জানালো চীন।

চীন প্রথম এ ভাইরাসে কারো মৃত্যুর কথা জানায় ১১ জানুয়ারি। কিন্তু ততদিনে এত দ্রুত এ ভাইরাস ছড়াতে শুরু করেছে যে জানুয়ারির শেষ দিকে উহানসহ হুবেই প্রদেশের বড় একটি এলাকা লকডাউন করে ফেলা হয়।

নানা কঠোর পদক্ষেপের ফলে মার্চের শুরু থেকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে চীনের পরিস্থিতি। কিন্তু ততদিনে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাসের বিস্তার ব্যাপক মাত্রা পেতে শুরু করেছে।

চীনে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অন্য দেশের তুলনায় এত কম হওয়ায় সন্দেহ আর অবিশ্বাস ছিল পশ্চিমা দেশগুলোর। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

তিন মাস অবরুদ্ধ দশার পর গত ৮ এপ্রিল উহান থেকে লকডাউন তুলে নেওয়া হয়।