করোনাভাইরাস: দেশে ২৪ ঘণ্টায় ৮৮৭ জন শনাক্ত, মৃত ১৪

দেশে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ৬৪তম দিনে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৮৭ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মহামারী করোনাভাইরাস আরও ১৪ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ২৩৬ জন।

রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচ হাজার ৬৪২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগের কিছু মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয় পাঁচ হাজার ৭৩৮টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ২২ হাজার ৬৫৭টি।

ডা. নাসিমা সুলতানা জানান: নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে আরও ৮৮৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ৬৫৭ জনে। মহামারী করোনাভাইরাস নতুন করে আরও ১৪ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। ফলে মোট মৃত্যু সংখ্যা ২২৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২৩৬ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন দুই হাজার ৬৫০ জন।

তিনি বলেন, নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের ১০ জন পুরুষ ও চারজন নারী। চার নারীর মধ্যে ত্রিশোর্ধ্ব একজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব একজন এবং ষাটোর্ধ্ব দুজন রয়েছেন। পুরুষদের মধ্যে চল্লিশোর্ধ্ব চারজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব দুজন, ষাটোর্ধ্ব তিনজন এবং ৯০ থেকে ১০০ বছর বয়সী একজন রয়েছেন।

ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১৬৯ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন দুই হাজার ১১৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭১ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ১১৪ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ২১৮ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার ৬২৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৯৭৯ জন এবং এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৭৪ হাজার ২০১ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৩৬ হাজার এবং ৪২২ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে করোনার বিস্তার রোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগেরপরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ৪১ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন দুই লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন চৌদ্দ লাখের বেশি মানুষ।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে এ ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে এ ছুটির মেয়াদ ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে চতুর্থবারের মতো ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। দেশবাসীকে নিজ বাড়িতে থাকার আহ্বান জানানো হয়। পরে সেটাও বাড়ানো হয় ৫ মে পর্যন্ত। পরে পঞ্চমবারের মতো করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ১৬ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার।

ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও।