অভিভাবক মাশরাফীকে এখনো ভুলতে পারছেন না ক্রিকেটাররা

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে গত চার-পাঁচ বছর দারুণ কিছু সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ দল। মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার নেতৃত্বেই অসধারণ অর্জনগুলো ঘরে তোলে লাল-সবুজের দল। শুধু দলকেই সাফল্য এনে দেননি, দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে একরকম আগলে রেখেছেন নড়াইল এক্সপ্রেস। প্রয়োজনে পাশে দাঁড়িয়েছেন।

মাশরাফীর এমন ভালোবাসা আজও ক্রিকেটাররা মনে-প্রাণে স্মরণ করেন। সাকিব আল হাসানের মতো বড় তারকা থেকে শুরু করে একালের মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন প্রত্যেকেই মাশরাফীর সমর্থন পেয়েছেন।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানের তামিম ইকবাল বলেন, ‘মাশরাফী ভাই সত্যিকারের একজন কিংবদন্তি ও অধিনায়ক। বাংলাদেশ কখনো তাঁর মতো অধিনায়ক পাবে না।’

করোনাভাইরাসের কারণে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত মানুষ। এই অবস্থায় বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে নিজের ফেসুবক পেজে লাইভ আড্ডা আয়োজন করে আসছেন তামিম। সেই লাইভে সবাই মাশরাফীর অবদান স্বীকার করেছেন।

পাঁচ বছর আগে সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে মুশফিককে নিয়ে নানান অভিযোগ করেছিলেন। সেই সময় মাশরাফীই মুশফিকের পাশে ছিলেন এবং তাঁকে পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছিলেন। এমন হয়েছিল সেই সময় হাথুরুসিংহে তাঁকে দল থেকে বাদ দিতে পারেন। কিন্তু আগলে রেখেছেন মাশরাফী।

এ সম্পর্কে মুশফিক বলেন, ‘কোনো চিন্তা-ভাবনা না করেই মাশরাফী ভাই সবসময় ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়ান। তাঁর সেই সাহস আছে এবং সবসময় দলকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।’

তামিমও বলেছেন তাঁর ক্যারিয়ারে মাশরাফীর অবদানের কথা, ‘কেউই তাঁর মতো নয়, কখনো কখনো মনে হয়, তিনি ভিন্ন গ্রহ থেকে এসেছেন। তিনি যেভাবে ভাবেন, যেভাবে একজন খেলোয়াড়ের পাশে দাঁড়ান, তা সত্যিই অসাধারণ। তিনি যদি ভাবেন কারো সম্ভাবনা আছে, তিনি তাঁকে সমর্থন করা থেকে পিছপা হন না।’

মাশরাফীর সমর্থন পেয়েছেন আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ। ২০১৯ বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহকে বাদ দেওয়ার কথা উঠেছিল, তাতে হস্তক্ষেপ করেন মাশরাফী। মাহমুদউল্লাহর পক্ষে কথা বলেন তিনি।

এ সম্পর্কে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘ক্যারিয়ারে বিভিন্ন সময়ে যখন  আমি চাপে ছিলাম, তিনিই (মাশরাফী) একজন, যে আমাকে সবসময় সহায়তা করেছেন।’

গত বিশ্বকাপে তিন নম্বরে ব্যাট করার কথা বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে বলেছিলেন সাকিব। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টে সাকিবকে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে পাঠাতে রাজি ছিল না। এমনকি তামিমও চাননি সাকিব তিন নম্বরে ব্যাট করুক।

সবাই চেয়েছিলেন সাকিব মিডল-অর্ডারে ব্যাটিং করুক। একমাত্র মাশরাফীই, সাকিবের ইচ্ছার পক্ষে সমর্থন করেন। টিম ম্যানেজমেন্ট ও খেলোয়াড়দের বিপক্ষে গিয়ে সাকিবকে তিনে ব্যাট করার সাহস দেন ম্যাশ। আর তাতেই ব্যাট হাতে ইতিহাস গড়েন সাকিব।

গত বিশ্বকাপে তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে দুটি সেঞ্চুরি ও পাঁচটি হাফসেঞ্চুরিতে ৬০৬ রান করেন সাকিব। গড় ছিলো ৮৬.৫৭। গত বিশ্বকাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন সাকিব।