করোনাভাইরাসে দেশে ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ১৭৭৩, মৃত ২২

দেশে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ৭৫তম দিনে গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৭৭৩ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। আর আক্রান্তদের মধ্যে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে সুস্থ হয়েছেন ৩৯৫ জন।

বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য জানান।

ডা. নাসিমা বলেন: গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও ১০ হাজার ১৭৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগের কিছু নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ হাজার ২৬২টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো দুই লাখ ১৪ হাজার ১১৪টি।

তিনি বলেন: নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ১ হাজার ৭৭৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৫১১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ২২ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪০৮-এ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৩৯৫ জন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫ হাজার ৬০২ জন।

ডা. নাসিমা বলেন, নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের ১৯ জন পুরুষ, তিনজন নারী। বয়সের দিক থেকে ১১ থেকে ২০ বছরের দুজন, ত্রিশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব দুজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১০ জন, ষাটোর্ধ্ব তিনজন, সত্তরোর্ধ্ব দুজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সী দুজন। এদের ১০ জন ঢাকা বিভাগের, আটজন চট্টগ্রাম বিভাগের, তিনজন সিলেট বিভাগের এবং একজন ময়মনসিংহ বিভাগের।

ঢাকা বিভাগের মধ্যে রাজধানীর আটজন, ঢাকা জেলার একজন ও নারায়ণগঞ্জের একজন বাসিন্দা ছিলেন। চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলার চারজন, চাঁদপুরের তিনজন ও কক্সবাজারের একজন ছিলেন। সিলেট বিভাগের মধ্যে সিটি করপোরেশনের একজন এবং অন্যান্য জেলার দুজন ছিলেন। আর ময়মনসিংহ বিভাগের যিনি মারা গেছেন তিনি ময়মনসিংহ শহরের বাসিন্দা ছিলেন।

বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ১৫৪ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন তিন হাজার ৮৯৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৩ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৯৬৬ জন।

সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। তন্মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ছয় হাজার ৩৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা আছে ৩৯৯টি, ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০৬টি।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে চার হাজার ৩২ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ ৫৫ হাজার ৫৩৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৫৯১জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ এক হাজার ১৫২ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৪ হাজার ৩৮২ জন।

দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৬টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৮৪০ জনকে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে করোনার বিস্তার রোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ৫১ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন তিন লাখের বেশি মানুষ। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২০ লাখের বেশি মানুষ।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি বাড়িয়ে সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার।

ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও।