দেশে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ৭৬তম দিনে গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৬৯৪ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। আর আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে সুস্থ হয়েছেন ৫৮৮ জন।
শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য জানান।
ডা. নাসিমা বলেন: গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও নয় হাজার ৯৯৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয়েছে নয় হাজার ৭২৭টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো দুই লাখ ২৩ হাজার ৮৪১টি।
তিনি বলেন: নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ১ হাজার ৬৯৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ২০৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ২৪ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৩২-এ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৫৮৮ জন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬ হাজার ১৯০ জন।
তিনি আরও বলেন: নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের ১৩ জন ঢাকা বিভাগের, নয়জন চট্টগ্রাম বিভাগের, একজন বরিশাল বিভাগের এবং একজন ময়মনসিংহ বিভাগের। বয়সের দিক থেকে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী পাঁচজন, ত্রিশোর্ধ্ব তিনজন, চল্লিশোর্ধ্ব দুজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঁচজন, ষাটোর্ধ্ব ছয়জন, সত্তরোর্ধ্ব দুজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সী একজন রয়েছেন। ১৫ জন মারা গেছেন হাসপাতালে, আটজন বাসায় এবং একজন হাসপাতালে আনার পথে মারা যান।
ডা. নাসিমা বলেন,করোনা রোগী শনাক্ত বিবেচনায় এখন পর্যন্ত সুস্থতার হার ২০ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ২২৫ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন চার হাজার ৬০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬২ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ২৮ জন।
সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ছয় হাজার ৩৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা আছে ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০৬টি।
দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৬টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৮৪০ জনকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে করোনার বিস্তার রোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ৫১ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন তিন লাখের বেশি মানুষ। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২০ লাখের বেশি মানুষ।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি বাড়িয়ে সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার।
ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও।