ঈদে নিজস্ব পরিবহনে বাড়ি ফেরা যাবে

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে যারা গ্রামের বাড়িতে ফিরতে চান তারা নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থায় বাড়ি ফিরতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাদের কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হবে না।

বৃহস্পতিবার সরকারের উচ্চমহল থেকে পুলিশকে এ ধরনের একটি মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ছুটিতে জরুরি কাজের জন্য কেউ যদি গ্রামের বাড়ি ফিরতে চায় তাহলে পুলিশ যেন তাদের অনুমতি দেয়। তাদের যেন খুব বেশি হয়রানি বা প্রশ্নোত্তরের শিকার না হতে হয়। তবে গণপরিবহন চলবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন: পুলিশ সদর দফতরের এ ধরনের একটি বার্তা পাওয়ার পর আমরা গাবতলী থেকে চেকপোস্ট তুলে দিয়েছি।

ঢাকায় কর্মরত পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন: ‘সরকারের উচ্চমহল থেকে মৌখিক এই নির্দেশনাটি প্রথমে পুলিশে আসে। নির্দেশনায় বলা হয়, যারা কষ্ট করে বাড়ি ফিরছেন তাদের যেন বাড়ি ফিরতে দেয়া হয়। তবে তারা গণপরিবহনে বাড়ি ফিরতে পারবেন না।’

নির্দেশনাটি পাওয়ার পর পুলিশের প্রতিটি রেঞ্জের ডিআইডি, পুলিশ সুপার (এসপি) এবং মেট্রোপলিটন শহরের উপ-কমিশনারদের (ডিসি) জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

অর্থাৎ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়, প্রাইভেটকারে, পায়ে হেঁটে বা অন্য যেকোনো পন্থায় ফেরা যাবে বাড়িতে।

এর আগে গত ১৭ মে থেকে ঢাকায় প্রবেশ ও ঢাকা থেকে বাহিরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপি জানায়, ‘মহামারি করোনাভাইরাস রোধকল্পে ১৭ মে থেকে ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ ও বাহির পথে চেকপোস্ট ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যাতে কোনো ব্যক্তি একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঢাকা শহরে প্রবেশ বা ঢাকা শহর থেকে বাইরে যেতে না পারেন। জরুরি সেবা ও পণ্য সরবরাহ কাজে নিয়োজিত যানবাহনসমূহ এই নিয়ন্ত্রণের আওতামুক্ত থাকবে। এমতাবস্থায় যথোপযুক্ত কারণ ব্যতীত কোনো ব্যক্তি যানবাহন চালনা করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এই নিয়ন্ত্রিত চলাচলের ক্ষেত্রে সম্মানিত নাগরিকবৃন্দের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে।’

অন্যদিকে ডিএমপির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অনেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করলে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়।

গত মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ ঢাকা থেকে রওনা হয়ে ফেরিঘাটে আটকেপড়া ঘরমুখী মানুষদের স্ব স্ব অবস্থানে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছিলন।

তিনি বলেছিলেন: ফেরিঘাটে আটকে পড়াদের অনুরোধ, দয়া করে যেখানে ছিলেন সেখানে ফিরে আসুন। যারা আটকে আছেন তাদের ঢাকায় ফেরার জন্য পুলিশ প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এরপরও থেমে থাকেনি মানুষের ঈদযাত্রা। আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সড়কে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শুক্রবার সকাল থেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস চলাচলের পরিমাণ বেড়েছে।

মহাসড়কে চলাচল করা ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াতকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি অংশ নিজস্ব গাড়ি নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। তবে মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ভাড়া করেও একটি বড় অংশ ঢাকা ছাড়ছেন। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বাড়ি টাকা দিয়েই এসব মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ভাড়া করছেন তারা।