অভিবাসীদের প্রতি বিশ্ব নেতাদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান বাংলাদেশের

করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসীদের প্রতি বিশ্ব নেতাদের আরও মানবিক ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক উচ্চ পর্যায়ের এক ভার্চুয়াল আলোচনায় এ আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো ও বেনিন যৌথভাবে অভিবাসন সংক্রান্ত সমমনা দেশসমূহের আয়োজনে শুক্রবার (৫ জুন) ‘কোভিড-১৯ এর প্রাক্কালে অভিবাসন : অভিবাসীদের স্বাস্থ্য ও রেমিটেন্স’ শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আয়ারল্যান্ডের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও প্রবাসীমন্ত্রী সিয়ারান ক্যানন টিডিসহ অভিবাসী প্রেরণকারী ও গ্রহণকারী দেশসমূহের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাষ্ট্রদূত এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া এসডিজি অর্থায়ন বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ড. মাহমুদ মোহাইয়েলদিন, আইএফএডি, ডব্লিউএইচও এবং অন্যান্য জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা এই সভায় অংশ নেন।

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা বলেন, অভিবাসীরা হচ্ছেন তাদের গ্রহণকারী দেশগুলোর উন্নয়নে অবদান রাখা প্রথম সারির কর্মী। এমনকি এই করোনাকালেও একথা সত্য। অতএব ওইসব দেশগুলো করোনাভাইরাস মোকাবিলা ও উত্তরণে যে পরিকল্পনা ও প্যাকেজ গ্রহণ করেছে তাতে অবশ্যই অভিবাসীদেরকেও অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে।

অনেক দেশ থেকে অভিবাসীদেরকে জোরপূর্বক নিজ দেশে ফিরে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে মর্মে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, প্রত্যাবর্তনকারীদের ব্যবস্থাপনা অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রচেষ্টাসমূহে অবশ্যই জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদার ও অংশীজনদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।

সভায় বক্তারা উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, অভিবাসন ও রেমিটেন্সের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্বীকার করে এর ওপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব উন্নয়নশীল দেশগুলোকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে মতামত দেন।

করোনা সৃষ্ট মন্দা সত্ত্বেও রেমিট্যান্স প্রবাহ সচল রাখার গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের ‘কল টু অ্যাকশন-রেমিট্যান্সসেস্ ইন ক্রাইসিস’শীর্ষক যৌথ বিবৃতিকে স্বাগত জানান স্থায়ী প্রতিনিধি।

নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২০ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পাওয়া বিষয়ক বিশ্বব্যাংকের প্রক্ষেপণের কথা তুলে ধরে স্থায়ী প্রতিনিধি সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেন, এর পরিণতি হতে পারে খুবই ভয়াবহ যা উন্নয়নশীল বিশ্বের রেমিট্যান্স-নির্ভরশীল পরিবারসমূহকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

রাষ্ট্রদূত ফাতিমা জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘পিপল অন দ্যা মুভ’ শীর্ষক নীতি-বিবৃতিকে স্বাগত জানান। এ বিবৃতিতে অভিবাসীদের ওপর কোভিড-১৯ এর সূদুর-প্রসারী প্রভাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বৈশ্বিক এই মহামারি চলাকালীন অভিবাসীদের শ্রমবাজারে প্রবেশ, সামাজিক সুরক্ষা এবং প্রাথমিক পরিষেবাগুলোর সুযোগ প্রদান এবং এ সংক্রান্ত বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাসমূহ তুলে নেয়ার ক্ষেত্রে বেশকিছু দেশ যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার প্রশংসা করেন তিনি।