সেনাবাহিনীর ২০৫৭ জন করোনায় আক্রান্ত, মারা গেছেন ১৭

অসহায় মানুষদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ও কাঁচা বাজারের চাহিদা পূরণ করতে গত বুধবার কক্সবাজারের রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সেনাবাজারের আয়োজন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন। 

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের শুরু থেকে বিভিন্ন বাহিনী বা সংস্থার সদস্যরা আক্রান্ত হচ্ছেন। এই যেমন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত দুই হাজার ৫৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এই তথ্য জানিয়েছে।

আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুধু সেনাবাহিনীর সাবেক বর্তমান সদস্যরা নন, সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেসামরিক ও অন্যান্য ৫৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন ভাইরাসটিতে। এদিকে সেনাবাহিনীর ১৮৮ জনের পরিবারের সদস্যও হয়েছেন আক্রান্ত। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্ত দুই হাজার ৭৮৮ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোট আক্রান্তের মধ্যে এক হাজার ৩১০ জন দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এক হাজার ৪৬১ জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এখনো পর্যন্ত ১৭ জন রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক অবসরপ্রাপ্ত ১৪ জন। এবং তিনজন কর্মরত সামরিক/অসামরিক সদস্য যাঁরা প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন ধরে অনিরাময়যোগ্য বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগে মৃত্যুকালে কোভিড-১৯-এ সংক্রমিত হয়েছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কর্মরত সব সদস্য, তাদের পরিবারবর্গ ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজিসহ (এএফআইপি) সব সিএমএইচে মোট ১৩টি ‘আরটি-পিসিআর’ মেশিন প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। এ ছাড়া সব সিএমএইচে পর্যাপ্ত পরিমাণ পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস এবং প্রয়োজনীয় ওষুধসহ আনুষঙ্গিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদি মজুদ আছে।

আজ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর পিসিআর ল্যাবরেটরিতে সশস্ত্র বাহিনীর ১০ হাজার ৩৭৮ জন, পরিবারবর্গ দুই হাজার ১২০ জন এবং বেসামরিকসহ অন্যান্য চার হাজার ৬৫৩ জন সদস্যসহ মোট ১৭ হাজার ১৫১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রণীত সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোভিড-১৯ সংক্রমিত রোগীদের সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষিত চিকিৎসক দ্বারা সার্বক্ষণিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

তবে একক বাহিনী হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২০৭ জন। এখনো পর্যন্ত সারা দেশে পুলিশের মোট ছয় হাজার ২০৬ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮৮৮ জনের মৃত্যু হলো। এ ছাড়া দেশে নতুন করে আরো দুই হাজার ৭৪৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট ৬৫ হাজার ৭৬৯ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত নিয়মিত বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।