১৬ বছর বয়সী জনপ্রিয় টিকটক তারকা সিয়া কক্কর আত্মহত্যা করেছে। তবে তার আত্মহত্যার নেপথ্যের কারণ এখনো প্রকাশ্যে আসেনি। কিন্তু সিয়ার আত্মহননের খবর অন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়ামাত্রই অনেকে ধারণা করতে শুরু করেন, সে ভারতের খ্যাতিমান সহোদর সংগীতশিল্পী নেহা কক্কর ও টনি কক্করের আত্মীয়। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে এমন ভেবে পোস্ট করতে থাকেন।
ভারতের সংবাদমাধ্যম রিপাবলিক ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে জানা যায়, নেহা কক্কর ও তাঁর ভাই টনি কক্করের সঙ্গে কোনো ধরনের পারিবারিক সম্পর্ক নেই সিয়া কক্করের। ১৬ বছর বয়সী সিয়া টিকটকে বেশ জনপ্রিয় ছিল। সেখানে তার লাখ লাখ অনুসারী। বলা চলে, ব্যাপক সাফল্যের পথে ছিল সে। মৃত্যুর মাত্র একদিন আগে সিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও শেয়ার করে।
খবরে বলা হয়, সিয়ার ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রধান এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সিয়ার সঙ্গে পরশু রাতে একটি নতুন গানে কাজ করা নিয়ে কথা হয়েছিল। সে সময় সিয়া ভালো মেজাজে ও পুরোপুরি ঠিক ছিল। ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকে সিয়ার অ্যাকাউন্টে একঝলক চোখ বুলালেই বোঝা যাবে, সে নিজের কাজে কতটা ভালো ছিল।
প্রায়ই সিয়া নিজের অনুসারীদের জন্য বিনোদনমূলক বিভিন্ন ভিডিও প্রকাশ করত। তবে সিয়া কক্কর মূলত টিকটকে তার নাচের ভিডিওগুলোর জন্য বিখ্যাত ছিল, যা লাখ লাখ ভিউ ও লাইক অর্জন করেছিল। তবে ভিডিওর সঙ্গে ঠোঁট মিলিয়েও তা প্রকাশ করতে শুরু করেছিল সিয়া। এরপর নাচের মাধ্যমে টিকটকের বড় তারকা হয়ে ওঠে।
সিয়ার বাড়ি নয়াদিল্লির প্রীতি বিহারে। তার এজেন্সি ম্যানেজার জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত কারণে আত্মহত্যা করতে পারে সিয়া। সিয়া সত্যিই ভালো কাজ করছিল বলে মনে করেন তিনি।
এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থাকা সিয়ার ভিডিওগুলোতেও কোনো হতাশার লক্ষণ দেখা যায়নি। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।
ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, টিকটক স্টার সিয়া কক্করের আত্মহত্যার নেপথ্যের কারণ উদঘাটনে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশ বলেছে, সিয়ার মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) ১৬ বছরের সিয়া কক্কর নয়াদিল্লিতে নিজ বাসভবনে আত্মহত্যা করে।
খবরে আরো বলা হয়েছে, মুঠোফোন জব্দ করা হলেও দিল্লি পুলিশ এখনো সেটি আনলক করতে পারেনি। ফোন আনলক করতে সিয়ার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলবে পুলিশ। সিয়ার কল রেকর্ড পরীক্ষা করবে তারা।
লকডাউন চলাকালে সিয়া তার বাসায়ই ছিল এবং সেখান থেকে বেশ কিছু ভিডিও পোস্ট করেছিল। সিয়ার স্কুল এখন বন্ধ। তবে পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবে এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলবে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, চার দিন ধরে সিয়া বিষণ্ণতায় ভুগছিল।
খবরে আরো বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তের পর সিয়ার বাসভবন থেকে কোনো সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। দিল্লির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, সিয়ার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ইন্ডিয়া টুডে টেলিভিশনকে তিনি বলেন, ‘২৫ জুন রাত ৯টার দিকে সিয়া তার নয়াদিল্লির বাসায় আত্মহত্যা করেছে। তার পরিবার শোকাহত এবং গোপনীয়তা বজায় রাখার অনুরোধ করেছে। সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি।’
ইনস্টাগ্রামে দুই লাখের বেশি ফলোয়ার সিয়া কক্করের। টিকটকে ১১ লাখের বেশি ফলোয়ার। মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা আগে সিয়া একটি নাচের ভিডিও আপলোড করে।