৫০০ বছরের পুরোনো তেঁতুলগাছ গাছ বাঁচাতে গ্রামবাসীর মানববন্ধন

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে আনুমানিক ৫০০ বছরের পুরোনো বিশাল তেঁতুলগাছ বাঁচাতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় কয়েকটি সামাজিক সংগঠন।

আজ শনিবার বেলা ১১টার সময় উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা বাজারে অবস্থিত তেঁতুলগাছ তলায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শত শত মানুষ ও গ্রামবাসীরা অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনের আয়োজন করে বালিয়াডাঙ্গা ছাত্র যুব সমাজ ও ঐতিহ্যবাহী সম্পদ রক্ষাকারী কমিটি, স্বপ্ন ছোঁয়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং বালিয়াডাঙ্গা গ্রামবাসী। মানববন্ধনের আগে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন।

সাংসদ আনার বলেন, স্থানীয়রা না চাইলে গাছ বাঁচিয়ে হাট চান্দির কাজ করা হবে বলে মত দেন। সম্প্রতি স্থানীয় একটি চক্র ঐতিহ্যবাহী এ গাছটি কাটতে ষড়যন্ত্র শুরু করে। গাছটি কাটা হচ্ছে ঘটনা জানাজানির পর এলাকার মানুষ ওই গাছ খেকো চক্রের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।

একই দিন দুপুর ১টার দিকে গ্রিন ভয়েস নামের একটি পরিবেশ রক্ষাকারী সংগঠন তেঁতুল তলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ সময় কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা. মাহফুজুর রহমানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা বাজারের মাঝখানে ৫০০ বছরের পুরাতন এই গাছটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই গাছের ছায়ায় প্রতিবছর বৈশাখী মেলা বসে। গরমের দিনে গাছটির সুশীতল ছায়াতলে বসে পথিকসহ এলাকার পরিশ্রান্ত মানুষ নিজেদের শরীর শীতল করে নেন। প্রতি বছর এই গাছে প্রচুর তেঁতুল উৎপাদন হয়। যার বিক্রিত অর্থ বাজারের একমাত্র মসজিদের উন্নয়ন কাজে জমা হয়।

গত ২২ জুন গাছটিকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে বা নতুন হাট চাঁদনি নির্মাণের কথা বলে এই গাছ কেটে ফেলার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দেওয়া আবেদনে স্থানীয় ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ছানা জোর সুপারিশ করে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। আবেদনটি করেন ইউনিয়নের ৭নং ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ও ৮নং ইউপি সদস্য কে.এম শামছুল হক।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মান্নান (৬০) নামের এক বৃদ্ধ জানান, সম্প্রতি আম্পান ঝড়ে বাজারের তেঁতুল গাছটির একটি ছোট ডালও ভেঙে পড়েনি। গাছের কোনো শুকনো ডালও নেই। এই গাছের ডাল ভেঙে পড়ে কোনো ব্যক্তির হতাহতের ঘটনাও কখনো ঘটেনি।

কিন্তু এরই মাঝে এই গাছটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে কাঁটার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই গাছের জন্য আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। বলছিলেন এই বৃদ্ধ।

তিনি আরও জানান, বালিয়াডাঙ্গা বাজারের এই তেঁতুল গাছটি আমাদের ঐতিহ্য। বাজারের সবকিছু এই গাছকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।