ঘর থেকে বাহিরে বেরোলেই মাস্ক পরা উচিৎ, বলছে যুক্তরাজ্যের রয়েল সোসাইটি

‘নভেল করোনাভাইরাস ঠেকাতে হলে ঘরের বাইরে সবারই ফেসমাস্ক পরা উচিত বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের জাতীয় বিজ্ঞানবিষয়ক একাডেমি।,

রয়েল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ভেঙ্কি রামাকৃষ্ণান বলেন, জনবহুল স্থানে যখনই কেউ যাবেন, তখনই তাঁর মাস্ক পরা উচিত। ভেঙ্কি রামাকৃষ্ণান বলেন, এতে যিনি মাস্ক পরছেন, তিনিও নিরাপদ থাকবেন এবং তাঁর কাছাকাছি যাঁরা আছেন, তাঁরাও সুরক্ষা পাবেন এবং এর পক্ষে তথ্যপ্রমাণ আছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

রয়েল সোসাইটি বলছে, মাস্ক পরতে না চাওয়াকে মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর মতোই খারাপ চোখে দেখা উচিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একসময় বলেছিল, মাস্ক পরার পক্ষে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ নেই। কিন্তু গত জুন মাসে তারা তাদের পরামর্শে পরিবর্তন এনে বলেছে, যেখানে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা সম্ভব নয়, সে রকম প্রকাশ্য স্থানে মাস্ক পরা উচিত।

বিজ্ঞানীরা বলেন, মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া, কথা বলা বা হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় নাক-মুখ দিয়ে যে অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির কণা (ড্রপলেট) বেরিয়ে আসে, তার মাধ্যমেই করোনাভাইরাস সবচেয়ে বেশি ছড়ায়।

মাস্কের কার্যকারিতা নিয়ে একটি গবেষণা রিপোর্ট লিখেছেন পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল এডেলস্টাইন। তিনি বলেন, মাস্ক যে সুস্থ মানুষকে আক্রান্তদের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষা করে, ‘তা সব সময়ই স্পষ্ট ছিল’।

অধ্যাপক পল এডেলস্টাইন আরো বলেন, ‘যেসব ব্যক্তি  ভাইরাস বহন করছেন, কিন্তু দেহে কোনো উপসর্গ নেই, তাঁরা নিজেদের অজান্তেই নাক-মুখ দিয়ে ড্রপলেট ছড়াচ্ছেন। তাঁদের মুখ ঢাকা থাকলে এসব ক্ষুদ্র পানির কণার বেশির ভাগই মাস্কে আটকা পড়বে অন্য কাউকে সংক্রমিত করার আগেই।’

অন্যদিকে যিনি মাস্ক পরে আছেন, তাঁকেও যে এটা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে, তার ‘কিছু প্রমাণ’ আছে, বলেন অধ্যাপক এডেলস্টাইন।

সিঙ্গাপুরের বিজ্ঞানীরা বলছেন, একজন ব্যক্তি করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ব্যাপারে সচেতন হওয়ার আগের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সময়কালে রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অবশ্য বলেছে, মাস্ক পরা এবং খুলে নেওয়ার সময় ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি আছে এবং এ ব্যাপারে ব্যবহারকারীকে সতর্ক থাকতে হবে।

গত এপ্রিল মাসে এক গবেষণায় দেখা যায়, যুক্তরাজ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরছে, অন্যদিকে ইতালিতে ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৬৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং স্পেনে ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরে।

গত মে মাসের শেষ দিকে অস্ট্রিয়ায় মাস্ক পরা-সংক্রান্ত নিয়মগুলো তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অস্ট্রিয়ার উত্তর-পশ্চিমে জার্মানি ও চেক প্রজাতন্ত্র-সংলগ্ন সীমান্ত এলাকায় নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর দেশটির কিছু অঞ্চলে মাস্ক পরা আবার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।,