‘যুক্তরাজ্যের মোবাইল ব্যবহারকারীদের চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে হুয়াওয়ের পণ্য কেনায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এবার চীনা কোম্পানিটির ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো ব্রিটিশ সরকার।
দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্রিটিশ মোবাইল কোম্পানিগুলো হুয়াওয়ের ফাইভ-জি প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে না।
৩১ ডিসেম্বর থেকে চীনা টেক জায়ান্ট হুয়াওয়ের ফাইভ-জি প্রযুক্তির সামগ্রী কিনতে পারবে না ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো। এ ছাড়াও ২০২৭ সালের মধ্যে হুয়াওয়ের ফাইভ-জি’র সব ধরনের সামগ্রী অপসারণ করতে হবে।
তবে চীনা কোম্পানিটির টু-জি, থ্রি-জি এবং ফোর-জি প্রযুক্তি অপসারণ করা প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে না যুক্তরাজ্য।
বিবিসিকে যুক্তরাজ্যের ডিজিটাল, সংস্কৃতি, গণমাধ্যম ও ক্রীড়া বিষয়কমন্ত্রী অলিভার ডাউডেন হাউজ অব কমনসের এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডাউডেন বলেন, এটি কোনো সহজ সিদ্ধান্ত ছিলো না। তবে দেশের টেলিকম কোম্পানি, আমাদের জাতীয় সুরক্ষা ও অর্থনীতির জন্য এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত।
ধারণা করা হচ্ছে, ওয়াশিংটনের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা অনুসরণে যুক্তরাজ্য সরকার এমন নির্দেশনা দিয়েছে হুয়াওয়েকে।
তাদের দাবি, কোম্পানির ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। যদিও হুয়াওয়ে তা অস্বীকার করে আসছে।
হুয়াওয়ে বলছে, এটি যুক্তরাজ্যের যে কারো জন্য খারাপ সংবাদ। এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাজ্যকে তথ্যপ্রযুক্তির জায়গায় পেছনে নিয়ে যাবে।
মোবাইল টেলিফোনের ক্ষেত্রে পরবর্তী বিপ্লব হিসেবে ধরা হয় ফাইভ-জি নেটওয়ার্ককে। হুয়াওয়ে এই ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক বসানোর জন্য অনেক দেশের সঙ্গেই আলোচনা চালাচ্ছে। এই নতুন নেটওয়ার্ক এত দ্রুতগতির হবে যে, এটি ব্যবহার করা হবে বহু নতুন কাজে। যেমন- চালকবিহীন গাড়ি চালানোর কাজে।
এখন হুয়াওয়ে যদি কোনো দেশের ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করে, চীন ঐ দেশের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি চালাতে পারবে বলে দাবি করছে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো। তারা চাইলে এই ফাইভ-জি নেটওয়ার্কে আদান-প্রদান করা বার্তা পড়তে পারবে, চাইলে নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিতে পারবে বা সেখানে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারবে।
দেশগুলোর মধ্যে আছে ‘ফাইভ আই’স’ বলে পরিচিত একটি গ্রুপ। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া গ্রুপের বাকী চারটি দেশ হচ্ছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। এই পাঁচটি দেশের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের জন্য খুবই ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা আছে। এর বেশিরভাগটাই করা হয় ইলেকট্রনিক উপায়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, এই পাঁচ দেশের কোনো দেশ যদি হুয়াওয়ের নেটওয়ার্ক তাদের গুরুত্বপূর্ণ কোনো ইনফরমেশন সিস্টেমে বসায়, তাহলে সেই দেশের সঙ্গে তারা আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করতে পারবে না।,