অধ্যক্ষ মাহফুজা হত্যা মামলায় দুই গৃহকর্মীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত

‘ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীন হত্যা মামলায় দুই গৃহকর্মীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার আগে দুপুর ১টায় আদালতের এজলাসে মাহফুজা চৌধুরীর গৃহকর্মী রিতা আক্তার ওরফে স্বপ্না ও রুমা ওরফে রেশমাকে হাজির করে পুলিশ। এরপরে আসামিদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা শুরু করেন বিচারক।

রায় ঘোষণার সময় রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আবু আব্দুল্লাহ ভূঞার সঙ্গে বসে ছিলেন নিহত মাহফুজা চৌধুরীর ছোট বোন ইয়াসমিন চৌধুরী ও তাঁর ছেলে সানিয়াত ইসমত অমিত। তাঁরা আদালতে বসে রায় শুনছিলেন। রায় ঘোষণার একপর্যায়ে বিচারক নিহত মাহফুজাকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাঁর বিবরণ বলেন। এ বিবরণ শুনে মাহফুজার স্বজনরা এজলাসের মধ্যে কান্নাকাটি শুরু করেন। সেখানে উপস্থিত অন্যরা তাঁদের সান্ত্বনা দেন।

রায়ের পরে মাহফুজার বোনের ছেলে সানিয়াত ইসমত অমিত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। দেশের আইন ব্যবস্থা, সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের ওপর বিশ্বাস ছিল। আজকে রায়ের মধ্য দিয়ে সেটা আবার বহাল থাকল। আশা করছি, রায় দ্রুত কার্যকর হবে।’

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের নিজ বাসায় খুন হন মাহফুজা চৌধুরী। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমত কাদির গামা নিউমার্কেট থানায় মামলা করেন। পরে গৃহকর্মী স্বপ্না ও রেশমা এবং দুই গৃহকর্মীর জোগানদাতা রুনু বেগমকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে পাঠায় পুলিশ।

এ ঘটনায় স্বপ্না ও রেশমা হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। ২০১৯ সালের ২১ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন মজুমদার দুই গৃহকর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বাসায় থাকা ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি স্যামসাং মোবাইল ফোন ও ৫০ হাজার টাকা চুরি করতে আসামিরা মাহফুজাকে নাকে-মুখে ওড়না পেঁচিয়ে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।

রুনু বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ না পাওয়ায় তাঁকে অব্যাহতির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

মাহফুজা চৌধুরী ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।,