নিঃশব্দে কাজ করে যেতে চান আইয়ুব বাচ্চুর জন্য

দুদিন বাদেই বাংলাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু চলে যাওয়ার দুই বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে ৫৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন জনপ্রিয় ব্যান্ডদল ‘এলআরবি’র প্রতিষ্ঠাতা।

তাঁরা লিখেছেন, ‘‘আমাদের মতো আপনাদেরও (ভক্তদের) অনেক কষ্টের এই ১৮ই অক্টোবর। আমার বাবুই-এর জন্য সবাই মন থেকে দোয়া করবেন। তাঁর ভক্তদের অনেকেরই জানার আগ্রহ আমরা পারিবারিক ভাবে কী করছি ঐ দিন, তাই এই কথাগুলো লেখা। আমরা আমার বাবুই-এর জন্য তাঁর জন্মদিনে ও গত বছর চলে যাওয়ার এই দিনে যতটুকু করলে আল্লাহ খুশি হন; ততটুকুই করেছি এবং করে যাব ইনশা আল্লাহ। শুরুতেই বলে নিই, আমরা ঘোষণা দিয়ে কখনই কিছু করিনি, ঘোষণা দিয়ে করিনি কারণ আমরা আমার বাবুই-এর কাছ থেকেই একটা জিনিস খুব ভালো করে শিখেছি যে, ‘তোমার ডান হাত দান করলে তোমার বাম হাত তা জানবে না। নিঃশব্দে কাজ করবা’ আল্লাহ্ পাকও তা পছন্দ করেন।’’

মঞ্চে আইয়ুব বাচ্চুর দুই সন্তান ফাইরুজ সাফরা আইয়ুব ও আহনাফ তাজওয়ার আইয়ুব।

ফাইরুজ সাফরা আইয়ুব ও আহনাফ তাজওয়ার আইয়ুব আরো লিখেছেন, ‘গত বছর আমরা চিটাগং-এ করেছি তাঁর পছন্দের জায়গাগুলোতে। মাজারগুলোতে। এইবার পেনডেমিক-এর জন্য সবকিছু একটু থমকে গেছে। গতবারের মতো এইবারও আমাদের দুই ভাইবোনের দেশে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পেনডেমিক-এর কারণে যেহেতু দেশের বাইরে আছি, আসা আর সম্ভব হলো না। তাই আমরা পারিবারিকভাবে আমার বাবুই-এর পছন্দের জায়গাগুলোতেই, যেখানে উনি আগেও দিতেন সেসব জায়গাতেই দোয়া খায়ের করছি। যেমন আমাদের বাসার পাশে মসজিদে মাসজুড়ে কোরান খতম, পারিবারিকভাবে খতম আর এতিমখানায় খাওয়ানো, যেটা বাবুই নিজেই আমাদের সবসময় করার জন্য শিখিয়েছেন। এ ছাড়া বাবুই-এর পছন্দের কয়েকটা এতিমখানায় কিছু জিনিস দিচ্ছি তাঁর নামে। আল্লাহ পাক যেন আমাদের এই দান ও ইবাদত কবুল করে নেন। তাঁর ভক্তদের কাছেও অনুরোধ থাকবে যারা তাঁকে অন্তরের গভীর থেকে ভালোবাসেন, তাঁরা অন্তত ঐ দিন দুই রাকাত নামাজ পড়ে তাঁর জন্য দোয়া করবেন।’

তাঁরা আরো লিখেছেন, ‘আল্লাহ্-পাক যেন তাঁর জীবদ্দশায় যেসব ভালো কাজ করেছেন, যেসব দান নীরবে করেছেন; যা কেউ শুধু আমরা ছাড়া জানতেও পারে নাই তার উছিলায় আমার বাবুইকে যেন জান্নাত নসিব করেন। আর আমাদের জন্য দোয়া করবেন, যেনে আমরা দুই ভাইবোন আর আমাদের কাছের কয়েকজন মিলে যত দিন বেঁচে থাকব তত দিন তাঁর জন্য এভাবেই যেন নিঃশব্দে করে যেতে পারি। তাঁর সব সৃষ্টিকে যেন আমরা রক্ষা করতে পারি। তাঁর জন্য যা যা করার ও যতটুকু করার তা আমরা করেই যাব আমাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। আমাদের আশা, আপনারাও আমাদের এই পথ চলায় সাথে থাকবেন আর বাবুইকে আগের থেকেও বেশি ভালোবাসবেন আর তার জন্য অনেক দোয়া করবেন শুধু এটাই আমাদের কামনা।’

আইয়ুব বাচ্চু ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার খরনা ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতের ধারায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পী এবং গিটারবাদক বলা হয় তাঁকে।