যেভাবে গ্রেফতার হলেন এসআই আকবর

কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে আটক হয়েছেন সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত তিনি।

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, ডোনা সীমান্তে গভীর জঙ্গল দিয়ে আকবর পালানোর সময় সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে জনতা তাকে আটক করে। পরে রশি দিয়ে বেঁধে তাকে নিয়ে আসা হয়। আটকের ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জেলা পুলিশের গোয়েন্দা টিমসহ একাধিক টিম তাকে জনতার হাত থেকে উদ্ধারে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, স্থানীয় খাসিয়া সম্প্রদায়ের মানুষের হাতে প্রথমে আকবর আটক হন। এসময় নিজেকে বাঁচাতে আকবর কাঁদতে থাকেন এবং তাকে ছেড়ে দিতে অনুনয় বিনয় করেন। এসময় জনতা তাকে রশি দিয়ে বেঁধে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আকবরকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক করা হয়েছে।

তবে সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, আকবরকে ভারতের খাসিয়ারা প্রথমে আটক করে। পরে তাকে বাংলাদেশে হস্তান্তর করা হয়।

গত ১১ অক্টোবর ভোর রাতে রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হয়। পরে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।

রায়হান ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন বলে পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হলেও নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ ছিল পুলিশ ধরে নিয়ে ফাঁড়িতে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরিবারের অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তদন্ত দল ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর সত্যতা পেয়ে জড়িত থাকায় ইনচার্জ আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন।

বরখাস্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন। ঘটনার পর অন্য ছয়জন পুলিশ হেফাজতে থাকলেও আকবর পলাতক ছিলেন।