ম্যারাডোনাকে মেসির গোলের ‘অঞ্জলি’

ন্যু ক্যাম্পে ওসাসুনাকে ৪-০ গোলে হারিয়ে লিগ টেবিলের ১৪তম জায়গা থেকে আটে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। এটা হলো নিরেট তথ্য। কিন্তু রবিবার এ ম্যাচকে ঘিরে, এ ম্যাচের একটি গোলকে কেন্দ্র করে যা ঘটলো সেটি ফুটবলের পৃথিবীকে নাড়া দিয়ে গেল ভীষণ।

ফুটবল গ্রহের সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর এটিই ছিল বার্সেলোনা ও লিওনেল মেসির প্রথম ম্যাচ। বার্সেলোনা ঠিক করে রেখেছিল প্রয়াত ম্যারাডোনাকে শ্রদ্ধা জানানো হবে। মেসি ঠিক করে রেখেছিলেন তার ‘আইডল’ ও মহান পূর্বসূরিকে শ্রদ্ধা জানাবেন। স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় ম্যাচ শুরুর আগে দু’দলের খেলোয়াড়েরা দাঁড়ান বৃত্তাকারে। মাঝরেখার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হয় সেই বিখ্যাত ১০ নম্বর জার্সিটি, যেটি পরে ১৯৮২ সালে বার্সেলোনার হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন ম্যারাডোনা। বিউগলের সুরে ফুটবলের আর্জেন্টাইন বরপুত্রকে জানানো হয় বিদায় অভিবাদন। নীরবতা পালিত হয় এক মিনিট। গ্যালারিতে তুলে ধরা হয় ম্যারাডোনার ১০ নং জার্সি, সেই জার্সি পরা ম্যারাডোনার মুখ ভেসে ওঠে বড় পর্দায়। মাথা নুইয়ে থাকা বার্সেলোনার বর্তমান  ১০ নম্বরকেও ধরে ক্যামেরা। বিষন্ন সেই মুখ, চোখ দুটি যেন বাষ্পাকুল।

এরপরও কিছু কাজ বাকি ছিল। ম্যারাডোনাকে তার নিজের মতো করে শ্রদ্ধা জানানো। ওপরে পরা বার্সেলোনার জার্সি খুলে বের করলেন নিউয়েলস ওল্ড বয়েজের ১০ নম্বর জার্সি, দুই নাম্বার টেনের স্মৃতি জড়িয়ে আছে যে জার্সিতে। তারপর আকাশে দু’হাত তুলে তিনি নিবেদন করলেন গোল, বুকে আঁকলেন ক্রসচিহ্ন। কিন্তু বেরসিক রেফারি ম্যাতিউ লাহোজ পকেট থেকে হলুদ কার্ডখানা ঠিকই বের করে তুলে ধরলেন মেসির সামনে। ফিফার আইনে কোথাও যে লেখা নেই ফুটবলের ঈশ্বর হলেও তাকে জার্সি খুলে শ্রদ্ধা জানানো যাবে!

মেসির অবশ্য তাতে কিছু এসে যায়নি। ‘নাম্বার টেন’কে এভাবেই গোলের অঞ্জলি দিতে চেয়েছিলেন ‘এলএম ১০’। সেই ইচ্ছাপূরণ তো হলো।