সত্যজিৎ রায় আছেন, থাকবেন

সাহিত্যিক, নির্মাতা, শিল্পী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এরকম বহু পরিচয়ে যাকে ডাকা যায়, তিনি সত্যজিৎ রায়। শুধু বাংলা ভাষাভাষি অঞ্চলের নয়, উপমহাদেশের এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব তিনি। তবে নির্মাতা হিসেবেই তিনি বিশ্বে জনশ্রুত, জনপ্রিয়।

‘পথের পাঁচালী’ সিনেমা নির্মাণের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে সত্যজিৎ রায়ের যাত্রা শুরু। এরপর একে একে নির্মাণ করেন পরশ পাথর, জলসা ঘর, অপুর সংসার, অভিযান, মহানগর, কাপুরুষ ও মহাপুরুষ, নায়ক, গুপি গাইন বাঘা বাইন, অরণ্যের দিন রাত্রি, সীমাবদ্ধ, অশনি সংকেত, সোনার কেল্লা, জনঅরণ্য, শতরঞ্জ কি খিলাড়ী, জয় বাবা ফেলুনাথ, হীরক রাজার দেশে, ঘরে বাইরে, গণশত্রু, শাখা প্রশাখা এবং সর্বশেষ বানানো সত্যজিতের সিনেমার নাম আগুন্তুক।

অসাধারণ সব চলচ্চিত্র নির্মাণ যেমন করেছেন, তার জন্যে হয়েছেন পুরস্কৃতও। তাঁর পুরস্কারের ঝুলি দেখে মনে হবে যেনো জাতীয় পুরস্কারের চেয়ে তিনি আন্তর্জাতিকভাবেই বেশী স্বীকৃত! আজীবন সম্মানস্বরূপ একাডেমি পুরস্কার (অস্কার) অর্জন ছাড়াও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছিলেন তিনি। যা তার আগে একমাত্র মহান নির্মাতা ও অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিনই পেয়ে ছিলেন।

ফ্রান্সের সরকার ১৯৮৭ সালে তাঁকে সে দেশের বিশেষ সম্মনসূচক পুরস্কার ‘লেজিওঁ দনরে’ প্রদান করেন। ১৯৮৫ সালে অর্জন করেন ভারতের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার দাদাসাহেব ফালকে। মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বেই ভারত সরকার তাঁকে প্রদান করেন দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন। সেই বছরেই মৃত্যুর পরে তাঁকে মরণোত্তর আকিরা কুরোসাওয়া পুরস্কার প্রদান করা হয়।

১৯২১ সালের ২ মে জন্ম নেয়া সত্যজিৎ রায় মারা যান ১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল। তার মৃত্যুর প্রায় ত্রিশ বছর পরেও তিনি যেন আরো জলজলে। সৃষ্টিশীলতা দিয়ে তিনি এখনও তরুণ নির্মাতাদের দিশারী।

আর তাইতো সম্প্রতি নেটফ্লিক্সের ‘রায়’ সিরিজের ফার্স্ট লুকে দেখা গেলো সত্যজিতের সৃষ্টি। তাঁর কয়েকটি গল্প অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এই সিরিজটি।