যুদ্ধ বন্ধের জন্য আলোচনা চলছে : আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি

বিদেশি বাহিনীর আফগানিস্তান ত্যাগের ডামাডোলে দেশটিতে নিজেদের অবস্থান আরও সংহত করেছে তালেবান। গত সাত দিনে দেশের ৩৪টি প্রদেশের ১৮টিরও বেশি দখল করে নিয়েছে তারা। তালেবানের হামলার মুখে দৃশ্যত অসহায় আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনী। শনিবার পরোক্ষভাবে তালেবানের মোকাবিলায় সরকারি বাহিনীর ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধ অবসানের জন্য আলোচনা চলছে।

সূত্র: বিবিসি

তালেবানের সাম্প্রতিক উত্থানের মধ্যে আফগান প্রেসিডেন্টকে এতোদিন পর্যন্ত এ ইস্যুতে প্রকাশ্যে কোনও কথা বলতে দেখা যায়নি। তবে শনিবার বিষয়টি নিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন তিনি। ভাষণে তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীকে পুনরায় সংহত করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

কাবুলের মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে তালেবান

সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, তালেবান যোদ্ধারা এখন কাবুল থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার (৩০ মাইল) দূরে রয়েছে। এরইমধ্যে তারা লোঘার প্রদেশের রাজধানী পুল-ই-আলম দখল করেছে যা কাবুল থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে। তাছাড়া কাবুল থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের মায়দান শার নামে আরেকটি প্রাদেশিক রাজধানীতে এখন তীব্র লড়াই চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থাগুলো অবশ্য তাদের সবশেষ মূল্যায়নে বলছে, তালেবান আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কাবুলের দিকে এগুনোর চেষ্টা করতে পারে। কাবুল প্রদেশের কাছাকাছি এলাকায় তালেবান অবস্থানগুলোতে মার্কিন বাহিনী সম্প্রতি বিমান হামলাও চালিয়েছে।

টিভিতে ভাষণের সময় প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিকে গম্ভীর দেখাচ্ছিল। তার পেছনে ছিল আফগানিস্তানের জাতীয় পতাকা। তিনি বলেন, ‘সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীকে পুনরায় সংহত করা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এ ব্যাপারে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

আফগানিস্তানে গত কয়েক দিনে সরকারের নিয়ন্ত্রণ যে প্রায় ভেঙে পড়েছে, তার ব্যাপারে প্রশাসনের পরিকল্পনা কী, তা নিয়ে অবশ্য তিনি খুব বেশি কিছু বলেননি।

সবশেষ খবরে মাজার-ই-শরিফ এলাকায় আবদুর রশিদ দোস্তামের মিলিশিয়া বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের প্রবল লড়াই চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির টেলিভিশন ভাষণের কয়েক ঘণ্টা আগে ক্রমাবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে কাবুল থেকে আমেরিকানদের তুলে নিয়ে যাবার জন্য মার্কিন মেরিন সেনাদের প্রথম দলটি আফগানিস্তানে অবতরণ করে। মার্কিন নাগরিকদের নিয়ে যাওয়া এবং বিমানবন্দর রক্ষার জন্য মোট তিন হাজার মার্কিন সেনা কাবুলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোয়াইট হাউস।

কাবুলের ওপর শিগগিরই সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু হবে। এমন আশঙ্কার মধ্যে অন্যান্য বিদেশি কূটনৈতিক মিশনগুলোও তাড়াহুড়ো করে তাদের লোকজনকে সরিযে নিচ্ছে।