ডা. সাবরীনা-আরিফসহ ৮ জনের বিচার শুরু

`নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরীনা আরিফ, সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আর এ অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আলোচিত মামলাটির বিচারকাজ শুরু হলো। আগামী ২৭ আগস্ট এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত  করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজ অভিযোগ গঠনের শুনানির সময় আসামিরা অব্যাহতির আবেদন করেন। বিচারক অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারকাজ শুরুর নির্দেশ দেন।’

এদিন ডা. সাবরীনা-আরিফসহ সব আসামিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। এরপর অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হলে আসামিপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী আদালতের কাছে অভিযোগ করে বলেন, তাঁরা এই মামলার কাগজপত্রের কপি পাননি। এ কারণে তাঁরা মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করতে পারেননি। এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির নতুন দিন ঠিক করা হোক।

জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরীনাকে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। ছবি : ফোকাস বাংলা

এরপর আসামিপক্ষের ওই আবেদনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, ‘এই মামলাটি একটি আলোচিত মামলা। এ মামলার অন্য আসামিরা মামলার কাগজপত্রের কপি পেয়েছেন। যাঁরা কাগজপত্র পাননি, সেটি তাঁদের ব্যর্থতা। আমরা চাই, আজ এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি হোক।’

উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে ম্যাজিস্ট্রেট সরাফুজ্জামান আনসারী এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য সময় ঠিক করেন। এরপর অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে গত ১৩ আগস্ট ডা. সাবরীনা, আরিফ চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছিলেন আদালত। ওই দিন আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করায় বিচারক সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে নতুন দিন নির্ধারণ করেন।

গত ৫ আগস্ট মামলার তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রট আদালতে ডা. সাবরীনা, সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার অপর ছয় আসামি হলেন শফিকুল ইসলাম রোমিও, জেবুন্নেসা, আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী ও বিপ্লব দাস।

অভিযোগপত্রে ডা. সাবরীনা ও আরিফুল হক চৌধুরীকে এই অসাধুচক্রের মূলহোতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিরা প্রতারণা ও জালিয়াতি করতে তাঁদের সহযোগিতা করেন বলে বলা হয়েছে।

গত ২৩ জুন সাবরীনার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। ২৪ জুন আরিফুল ও তাঁর সহযোগী সাঈদ চৌধুরীর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে ১৫ জুলাই আরিফের আবার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

এ ছাড়া গত ১২ জুলাই দুপুরে ডা. সাবরীনাকে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগীয় উপকমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে তেজগাঁও থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। ১৩ জুলাই তাঁকে তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১৭ জুলাই আরো দুদিনের রিমান্ডে নেয় ডিবি। ২০ জুলাই দুই দফা রিমান্ড শেষে আদালত সাবরীনাকে কারাগারে পাঠান।,