৬ মাস সমুদ্রে ভেসে ইন্দোনেশিয়ায় ৩ শত রোহিঙ্গার দল

`টানা ৬ মাস সমুদ্রে ভেসে থেকে প্রায় ৩০০ জন রোহিঙ্গার একটি দল সোমবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ। আছেনিস পুলিশ জানিয়েছে, লোকসুমাওয়ের উপকূলে কয়েক কিলোমিটার দূরে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি কাঠের নৌকা মাঝরাতের দিকে দেখে স্থানীয় জেলেরা। স্থানীয় পুলিশ প্রধান ইপটু ইরওয়ানস্যা সাংবাদিকদের বলেন, সর্বশেষ তথ্য অনুসারে সেখানে ২৯৭ জন রোহিঙ্গা রয়েছে, তাদের মধ্যে ১৮১ জন নারী ও ১৪ শিশু রয়েছে।

সূত্র : বিবিসি

লোকসুমাওয়ের রেডক্রসের প্রধান জুনায়েদী ইয়াহিয়া বলেন, বর্তমানে তাদের একটি অস্থায়ী স্থানে রাখা হয়েছে। আশাকরি তাদের আজ কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা যাবে, তবে তাদের স্বাস্থ্য, বিশেষত করোনাভাইরাস সংক্রমণই আমাদের মূল চিন্তার বিষয়।

রোহিঙ্গাদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ ১৩ বছর বয়সী একজনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ভিডিওতে দেখা যায়, মাস্ক পরা নারীরা প্লাস্টিকের ব্যাগে করে জিনিসপত্র বহন করছে এবং ছাদের উপর পুরুষেরা গাদাগাদি করে বসে রয়েছে।

এর আগে জুন মাসে আচেনিস জেলেরা ১০০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে উদ্ধার করে। যাদের মধ্যে ৭৯ জন নারী ও শিশু ছিলো। যদিও ইন্দোনেশিয়ান কর্তৃপক্ষ তাদের ফেরত পাঠানোর হুমকি দিয়েছিলো।

মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা নৌকায় করে ভেসে বিভিন্ন দেশে যাওয়া শুরু করে। এমনকি বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরগুলো থেকেও তারা পালিয়ে যায়।

রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে অলাভজনক গোষ্ঠী আরাকান প্রকল্পের পরিচালক ক্রিস লেওয়া বলেন, সোমবার আচেহতে যাওয়া রোহিঙ্গারা মার্চ মাসের শেষে বা এপ্রিলের প্রথম দিকে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সীমান্তে আরো কড়াকড়ি সৃষ্টি হওয়ায় মালয়েশিয়ার এবং থাই উভয় কর্তৃপক্ষই তাদের ফিরিয়ে দেয়।

তিনি যোগ করেন, চোরাচালানকারীরা রোহিঙ্গাদের কয়েকটি নৌকায় ভাগ ভাগ করে, যার মধ্যে কয়েকটি জুনে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ায় অবতরণ করতে সক্ষম হয়। তারপরও কয়েকশ’ রোহিঙ্গা রোববার রাত পর্যন্ত সমুদ্রেই অবস্থান করছিলো। চোরাচালানকারীরা এসব রোহিঙ্গাকে মূলত নৌকায় জিম্মি করে রেখেছিলো কারণ তারা তাদের চাহিদামতো টাকায় আদায় করতে ব্যর্থ হয়।,