প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবিতে বেলারুশে বিক্ষোভ

‘টানা ২৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর পদত্যাগের দাবিতে টানা সপ্তম সপ্তাহের মতো রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানী মিনস্কের রাস্তায় জড়ো হতে থাকেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারীরা।

সূত্র : বিবিসি

দুপুর গড়াতেই এই সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় এক লাখ। এসময়, প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো শহর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানীজুড়ে মোতায়েন করা হয় প্রায় ১০ হাজার দাঙ্গা পুলিশ।

এক বিক্ষোভকারী জানান, কোনো বিরোধী নেতা বিক্ষোভে অংশ নিলেই, তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আজকে যাদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসে সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেয়ার কথা প্রেসিডেন্টের, সেসব বিরোধী নেতার সবাই আজ কারাগারে।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া আরেকজন জানান, বিক্ষোভ কতদিন চলবে যা নির্ভর করে সরকারের ওপর। তারা যদি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন বন্ধ না করে, মানুষই আত্মরক্ষার্থে যা করার তাই করবে। তখন সবকিছুর জন্য এই অবৈধ প্রেসিডেন্টই দায়ী থাকবে।

এদিকে, দিনভর শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চললেও, দুপুরের পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়। এসময়, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা শহরের কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ। এক পর্যায়ে বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারীকে আটক করতে দেখা যায় মুখোশ পরিহিত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসেব মতে, এদিন বেশ কয়েকজন নারীসহ অন্তত একশ বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ।

এদিকে, ইউরোপজুড়ে আবারও করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায়, পুনরায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা দিয়েছে অধিকাংশ দেশ। এমনকি নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের জরিমানার পরিমাণও বাড়িয়েছে কোন কোন দেশ। মাসের পর মাস এমন নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে বিক্ষোভ হয়েছে জার্মানির ডুসেলডর্ফে।

নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবিতে এদিন কোনো ধরনের মাস্ক ছাড়াই বিক্ষোভে অংশ নেন হাজারো বিক্ষোভাকারী। করোনা নিয়ে অযথা জনমনে আতঙ্ক তৈরি না করে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

এক আন্দোলনকারী জানান, এই আতঙ্কের কোনো মানে নেই‌। এখানকার ৬ লাখ বাসিন্দাদের মধ্যে মাত্র ৩ হাজার জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। এটা কিছুই না। এমনকি তারা খুব একটা অসুস্থও নয়। সরকার অযথাই মহামারির নামে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে।

‘এপ্রিলের পর এখানে কেউ করোনায় মারা যায়নি। মহামারি বলে কিছু নেই এখানে। সব মিথ্যা। তবুও মাসের পর মাস নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাখা হয়েছে। করোনা নিয়ে আসলে এখানে রাজনীতি হচ্ছে।’ বলেন আরেক আন্দোলনকারী।

অন্যদিকে, স্পেনে নতুন করে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায়, সরকারের করোনা মোকাবিলা নীতির বিরোধিতা করে বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানী মাদ্রিদে। ভাইরাস ঠেকাতে এলাকাভিত্তিক লকডাউন এবং নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা দেয়ায়, প্রাদেশিক সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ এনে, সবার জন্য সমান আইন জারির দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। বর্তমান প্রশাসন ভাইরাস ঠেকাতে পুরোপুরি ব্যর্থ বলেও অভিযোগ করেন তারা।,