দুর্গাপূজা নিয়ে ভারতীয় হাইকোর্টের আদেশ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে পূজা আয়োজকরা

‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে পূজা প্যান্ডেলগুলিতে দর্শনার্থীদের জন্য ‘প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ এলাকা’ ঘোষণায় হাইকোর্টের আদেশ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে কলকাতার ৪০০ শীর্ষ দুর্গাপূজা আয়োজক।  বুধবার এই অনুরোধের বিষয়ে শুনানি করবে ভারতীয় হাইকোর্ট।

সূত্র : বিবিসি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের মাত্র দুই দিন আগে দুর্গাপূজা আয়োজকদের কমিটির একটি অংশ দুর্গোৎসব ফোরাম আদালতকে এমন অনুরোধ জানায়।

সোমবার সেদেশের হাইকোর্ট আদেশ দেয় পূজা প্যান্ডেলের ভেতরে শুধুমাত্র পূজার আয়োজকরাই উপস্থিত থাকতে পারবে। বড় পূজার আয়োজনে থাকবে ২৫ জন আর ছোট আয়োজনে ১৫ জন।  আয়োজকদের নাম প্রতিদিন ডিসপ্লে বোর্ডে লেখা হবে এবং সেটা বদলানো যাবে না।

আয়োজকদের প্যান্ডেলের বাইরে ব্যারিকেড দেওয়ার আদেশও দিয়েছেন আদালত। ছোট আয়োজনের প্রবেশপথ থেকে ৫ মিটার দূরে আর বড় আয়োজনের ক্ষেত্রে ১০ মিটার দূরে ব্যারিকেড দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

দুর্গোৎসব ফোরামের প্রধান শ্বাশত বোস বলেন, এটি আমাদের জন্য একটি বিশাল ধাক্কা। গত চার মাস ধরে আমরা দর্শনার্থীদের জন্য সবকিছু নিরাপদ করে তোলার কাজ করে যাচ্ছি।  মাস্ক বাধ্যতামূলক করেছি, স্যানিটাইজিং গেট বসানো হয়েছে, তাপমাত্রা স্ক্রিনিংয়ের জন্য মেশিন কিনেছি।

প্রস্থান দরজা প্রবেশ দরজার থেকে বড় করেছি।  কিন্তু এখন প্যান্ডেলের ১০ মিটার আগে ব্যারিকেডের নিয়ম করা হয়েছে।  জনতা কীভাবে ছড়িয়ে পড়বে? এতে তো আরও বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।

গত মাসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহামারীর এই সময়ে করোনাভাইরাস আটকানো এবং পূজা অনুষ্ঠিত করার পরিকল্পনা জানিয়ে বলেছিলেন, আমরা অবশ্যই এই বছর দুর্গাপূজার আয়োজন করবো, তবে যেকোনো মূল্যে ভিড় এড়াতে হবে।

কারণ শকুনরা বসে আছে আমাদের দোষ দেওয়ার জন্য, তাতে যদি আমরা পূজার অনুমতি না দিই তাহলেও আবার পূজার পরে কোনও সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় তাহলেও।

আদালতের আদেশের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রশাসনের সাথে সাক্ষাত করেন। পূজার আগে আগে শারীরিক দূরত্ব না মেনে, মাস্ক না পরে কেনাকাটার কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে ভীত অনেকেই। পূজার পরে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরাও।

পশ্চিমবাংলায় এখন পর্যন্ত ৩ লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আর প্রাণ হারিয়েছে ৬০০০ এরও বেশি মানুষ।

ভারতীয় হাইকোর্টের বক্তব্য, ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে মানুষের জীবন এখনো স্বাভাবিক হয়নি। তাই এ বছর দুর্গাপূজা কীভাবে পালিত হবে সে সম্পর্কে বিধিনিষেধ আরোপ করাই ভালো হবে।,