বিতর্কিত’ কৃষি আইন স্থগিত রাখতে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ

ভারতে কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষক বিক্ষোভের কারণে সৃষ্ট সংকট সরকার যেভাবে সামলাচ্ছে তাতে হতাশা প্রকাশ করেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার আদালত সরকারকে আইনটি স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, সরকার তা না করলে সুপ্রিম কোর্টই তা করবেন। কৃষকদের সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি কমিটি গঠনেরও তাগিদ দিয়েছেন আদালত। কৃষি আইন চ্যালেঞ্জ করা এক পিটিশনের শুনানির সময় এসব কঠোর মন্তব্য করেছেন আদালত।

সূত্র :  এনডিটিভি

কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে গত নভেম্বর থেকে দিল্লি সীমান্তে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন ভারতের লাখ লাখ কৃষক। কৃষক ও সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে ইতোমধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হলেও তাতে সংকট নিরসন হয়নি। আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকরা অনড় থাকলেও সরকার চাইছে কৃষি আইনের সংস্কার। এই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে চলছে একাধিক পিটিশনের শুনানি।

সোমবার এক শুনানিতে ভারতের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে বলেন, ‘‌অন্যায় কোনও কিছু হলে আমরা সবাই দায়ী থাকবো। আমরা চাই না কেউ আহত হোক বা আমাদের হাতে কারও রক্ত লাগুক।’ সংকট নিরসনে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সময় চাওয়া হলে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি না যে আপনারা এই ইস্যুটি কার্যকরভাবে সামলাচ্ছেন। আমরা আজ একটি সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। যদি কোনও রক্তপাত হয় তাহলে দায় কে নেবে?’ অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে ভেনুগোপাল যখন আদেশ দেওয়ায় তড়িঘড়ি হচ্ছে বলে প্রশ্ন তোলেন তখন জবাবে এসএ বোবদে বলেন, আমাদের ধৈর্য নিয়ে জ্ঞান দেবেন না। আমরা দীর্ঘ সময় দিয়েছি।’

শীর্ষ আদালত বলেছেন, নতুন কৃষি আইন স্থগিত করার পরও কৃষকদের বিক্ষোভ চলতে পারে। তবে একই জায়গায় বিক্ষোভ চলবে নাকি অন্য পথে হাঁটতে হবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলেও উল্লেখ করেছেন আদালত।

এর আগের শুনানিতে আদালতের তরফে বলা হয়, পরিস্থিতির কোনও ধরনের অগ্রগতিই হয়নি। প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে বলেন, আদালতের উদ্দেশ্য ছিল সরকার ও কৃষকদের মধ্যে আলোচনা উৎসাহিত করা। তবে তাতে কোনও সাফল্য পাওয়া যায়নি। সেদিকে ইঙ্গিত করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘গত শুনানিতে আমরা প্রশ্ন রেখেছিলাম, কোনও জবাব পাইনি। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। মানুষ আত্মহত্যা করছে। এই আবহাওয়ায় নারী ও বৃদ্ধরা কেন বিক্ষোভে থাকবেন?’

উল্লেখ, কৃষক ও সরকার পক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে আট দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হলেও কোনও কার্যকর সমাধান আসেনি। সরকার আইন সংস্কারে সম্মত হলেও কৃষকেরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আইন বাতিল ছাড়া অন্য কোনও কিছুতেই পিছু হটবেন না তারা।