ক্রিকেট থেকে ছুটি চেয়ে বিসিবির কাছে চিঠি দিয়েছেন সাকিব আল হাসান

আগামী ১১ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে এবং দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকা যাবে বাংলাদেশ দল। ৬ মাস আগে টেস্ট দল থেকে ছুটি নিলেও দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ফরম্যাটের স্কোয়াডে আছেন সাকিব আল হাসান। রবিবার সাকিব জানালেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো মানসিক ও শারীরিক অবস্থায় নেই তিনি। এজন্য বিসিবিকে চিঠি দিয়ে ছুটিও নাকি চেয়েছেন এই অলরাউন্ডার।

রবিবার রাতে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ার আগে সাকিব বলেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ নিয়ে যেটা বলতে হয়…মানসিক ও শারীরিক যে অবস্থায় আছি আমার কাছে মনে হয় না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা সম্ভব খুব একটা। এই কারণে আমার মনে হয়, যদি আমি একটা বিরতি পাই, আমি যদি ওই আগ্রহটা ফিরে পাই তাহলে আমার খেলাটা সহজ হবে।’

পারফরম্যান্স না করে দলে থাকাটাকে সতীর্থদের সঙ্গে চিট হিসেবে দেখছেন সাকিব, ‘যেটা বললাম, এখন পর্যন্ত যেটা আমার কাছে মনে হচ্ছে, যদি আমার মন মানসিকতা এরকম থাকে, ফিজিক্যাল কন্ডিশন এরকম থাকে, মেন্টাল কন্ডিশনও এরকম থাকে… এটা দলের জন্যই ক্ষতি হবে। যেটা আগেও বললাম, আমি যেটা নিজে মনে করি…আমার নিজের প্রতি নিজের যে সম্মান, মানুষ যেটা প্রত্যাশা করে, যে ধরণের পারফরম্যান্স সেটা যদি আমি করতে না পারি সেখানে আসলে যাত্রী হয়ে থাকাটা আসলে খুবই দুঃখজনক হবে। সতীর্থদের সঙ্গে চিট করার মতোই একটা ব্যাপার হবে বলে মনে করি।’

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যেতে ইচ্ছুক কিনা?  এমন স্পষ্ট প্রশ্নে সাকিবের উত্তর, ‘এটা আসলে সিদ্ধান্তের ব্যাপার। পাপন ভাইয়ের (বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন) সঙ্গে কথা বলার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম পুরো সিরিজটাই খেলতে যাবো। এজন্যই আমার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে, গতকাল (শনিবার) সিরিজ শেষ হওয়ার পর অনেক চিন্তা করেছি, এর আগেও তো পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছে সেটা অন্য বিষয়। আমি যখন ক্রিকেটটা উপভোগ করতে না পারি সেটা আমার জন্য দুঃখজনক। সেটা আমি কখনোই চাই না। এটা আমার সতীর্থদের ঠকানো। সেটা আমি কখনোই চাই না।’

চিঠিকে আলাদা কোন ফরম্যাটের কথা লিখেননি সাকিব। কেবল জানিয়েছেন এই মুহুর্তে তিনি খেলতে ইচ্ছুক নন, ‘আমি চিঠি দিয়েছি কিন্তু বলিনি যে ওয়ানডে সিরিজ খেলবো না বা টেস্ট খেলবো না। আমি নিজের অবস্থান আসলে জানিয়েছি জালাল ভাইকে (ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান)। উনি বলেছেন—তুমিও দুদিন চিন্তা করো। উনারাও করুক। তারপর হয়তো আলোচনা করে কোনো একটা সিদ্ধান্ত আসবে। আমি আসলে যেটা বললাম, আমি খুব খোলা মনে আছি। এখন আমি ক্রিকেট খেলার পরিস্থিতিতে নেই। আমি ওই পরিস্থিতি যখন আসব তখন অবশ্যই চাইবো ক্রিকেট খেলতে।’

আফগানিস্তান সিরিজে নিজের প্রত্যাশামতো পারফরম্যান্স না করায় হতাশা ভর করেছে সাকিবের, ‘স্বাভাবিকভাবে আমার ব্যক্তিগত দিক থেকে চিন্তা করলে অবশ্যই হতাশাজনক। আমার নিজের প্রতি নিজের যে প্রত্যাশা, মানুষ যেভাবে প্রত্যাশা করে, বিসিবি যেভাবে প্রত্যাশা করে অবশ্যই ওভাবে করতে পারেনি। এজন্য অবশ্যই আমি হতাশ।‘

সাকিব নানা কারনে, নানা সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ছুটি নিয়েছেন। বাংলাদেশের সবশেষ ২০১৭ সালে সাকিব টেস্ট সিরিজ থেকে ছুটি নিয়েছিলেন। আইপিএলে খেলবেন বলে গত বছর শ্রীলঙ্কায় টেস্ট সফরে যাননি। এ বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পারিবারিক কারনে টেস্ট সিরিজ থেকে ছুটি নেন। এবার শুরুতে টেস্ট সিরিজ থেকে ছুটি নিলেও এখন সাকিব বলছেন এই মুহুর্তে আন্তর্জাতিক খেলার মতো অবস্থায় নেই তিনি।