বীর মুক্তিযোদ্ধা ‘গামা’ আর নেই

বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ‘বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ’ লালবাগ ও চকবাজার থানা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার এবং সমাজকর্মী এনায়েতুল হক গামা (৬৯) আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

গত কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পর বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

এনায়েতুল হক গামার বন্ধু মাহবুব আহমেদ শহীদ বিষয়টি চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বুধবার বাদ আসর রায়েরবাজার গোরস্থানে যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা গামাকে দাফন করা হয়েছে।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দুই কন্যা, বন্ধু, স্বজন, সহযোদ্ধা ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

১৯৬৯ সালে এনায়েতুল হক কুস্তিতে পূর্ব পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। নিয়মিত ব্যায়াম করতেন। রেসলিংয়ে ভালো করার কারণে সবাই গামা বলে ডাকতো।

বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন গামা। এর মধ্যে নিজেই পরিচালনা করেছেন কয়েকটি অভিযান। এর একটি ছিল ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া।

সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী অপারেশন ছিল মন্ত্রী ইসহাকের গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটানো। ঘটনাটি ঘটে ১৯৭১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর, দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে। এপিপি পরিবেশিত খবর অনুসারে, কর্মিসভা শেষে মন্ত্রী সচিবালয়ে ফিরছিলেন। গাড়িতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে মন্ত্রী আহত হন। রক্তাক্ত অবস্থায় মন্ত্রীকে হাসপাতলে নেওয়া হয়।

লালাবাগের মুক্তিযোদ্ধাদের এই দলের আরো কয়েকটি অপারেশনেও ছিলেন গামা। এর মধ্যে রয়েছে লালবাগ রহমতউল্লাহ স্কুলে জামায়াতে ইসলামীর মিটিং বোমা মেরে পণ্ড করে দেওয়া। কমান্ডার শহীদের নেতৃত্বে ঢাকায় প্রথম গাড়িবোমা বিস্ফোরণের অপারেশনেও সঙ্গে ছিলেন গামা।

চকবাজারের এক চেয়ারম্যানের বাসায় রাত ৩টায় ঢুকে একটি রিভলবার ছিনিয়ে এনেছিলেন। ১৪ ডিসেম্বর বসিলায় ঢাকার অন্যান্য দলের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখসমরেও অংশ নিয়েছিলেন এনায়েতুল হক গামা।