করোনাভাইরাসে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড

দেশে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ৭২তম দিনে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১ হাজার ৬০২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, আর প্রাণ হারিয়েছেন ২১ জন। এসময়ে সুস্থ হয়েছেন ২১২ জন।

সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন: নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ১,৬০২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৩ হাজার ৮৭০ জনে। আরও ২১ জন মারা যাওয়ায় দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৪৯ জনে। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪,৫৮৫ জন।

ডা. নাসিমা বলেন: গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯ হাজার ৯০৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় আগের দিনের নমুনাসহ ৯ হাজার ৭৮৮টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ১ লাখ ৮৫ হাজার ১৯৬টি।

তিনি জানান: আক্রান্ত শনাক্তের ভিত্তিতে সুস্থ হওয়ার হার ১৯.২১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১.৪৬ শতাংশ। এই ভাইরাসে আক্রান্তে হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ, ৪ জন নারী। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৭ জন, রাজশাহী বিভাগের ১ জন ও সিলেট বিভাগের ১ জন।

ডা. নাসিমা বলেন: বয়সের বিবেচনায় মৃতদের মধ্যে ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ৮ জন এবং ৬১-৭০ বছরের মধ্যে ৫ জন।

তিনি জানান: ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ২৩১ জন। ছাড় পেয়েছেন ৯৬ জন। বর্তমানে মোট আইসোলেশনে আছেন ৩ হাজার ৩৮৬ জন। দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ৯ হাজার ১৩৬টি। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২২০টি শয্যা বেড়েছে। তাছাড়াও প্রস্তুত হচ্ছে অনেক আইসোলেশন শয্যা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে করোনার বিস্তার রোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া সবাইকে ধূমপান পরিহার করারও অনুরোধ জানানো হয়। ধূমপানের কারণে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ফলে করোনায় সংক্রমণের আশঙ্কা প্রবলভাবে বেড়ে যায়।

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২১২টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ৪৮ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন তিন লাখের বেশি মানুষ। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১৮ লাখের বেশি মানুষ।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি বাড়িয়ে সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার।

ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও।