করোনাভাইরাস দেশে শনাক্তের সংখ্যা লাখ ছাড়ালো, ৩৮ জনের মৃত্যু

দেশে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ১০৩তম দিনে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৮০৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এর ফলে মোট শনাক্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে ৩৮ জন মারা গেছেন। এসময়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৭৫ জন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য জানান।

ডা. নাসিমা বলেন: গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৩৪৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৬ হাজার ২৫৯টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৫০৩টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

তিনি বলেন: নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৩ হাজার ৮০৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৩৪৩-এ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩১ শতাংশ।

তিনি বলেন: গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৯৭৫ জন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪০ হাজার ১৬৪ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৯ দশমিক ২৬ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন: গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন, তাদের ৩১ জন পুরুষ এবং সাতজন নারী। হাসপাতা‌লে মারা গেছেন ৩১ জন এবং বাসায় মৃত্যু হয়েছে সাতজনের। এদের মধ্যে ১ থেকে ১০ বছরের একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের দুজন, ত্রিশোর্ধ্ব পাঁচজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ছয়জন, ষাটোর্ধ্ব ১৪ জন, সত্তরোর্ধ্ব পাঁচজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী দুজন রয়ে‌ছেন। ১৪ জন ঢাকা বিভাগের, ১৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, দুজন খুলনা বিভাগের এবং একজন করে রাজশাহী, ব‌রিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৮২১ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ৩২ হাজার ৬৪১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৬০৫ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৫ হাজার ৭০৬ জন।

দেশে কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ৮৪ লাখ ৮৮ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৪ লাখ ৫১ হাজারের বেশি মানুষ। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৪৪ লাখ ১৮ হাজারের বেশি মানুষ।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি বাড়িয়ে সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। দেশের ইতিহাসের দীর্ঘ এ ছুটির পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৩১ মে থেকে অফিস-আদালত খোলা হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে গণপরিবহনও।