করোনাভাইরাস নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ১৬টি অঙ্গরাজ্য

নভেল করোনাভাইরাসজনিত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ১৬টি অঙ্গরাজ্য। বিষয়টিকে সারা দেশের জন্য ‘গুরুতর সমস্যা’ বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের শীর্ষ চিকিৎসা কর্মকর্তা ড. অ্যান্থনি ফসি।

দুই মাস বিরতির পর গতকাল শুক্রবার করোনা ইস্যু নিয়ে কথা বলেছে হোয়াইট হাউস টাস্ক ফোর্স। আনুষ্ঠানিক ওই ব্রিফিংয়ে ড. ফসি বলেন, ‘ওটাকে (করোনাভাইরাস) শেষ করা জন্য আমাদের কাছে একটাই পথ রয়েছে। তা হলো, সম্মিলিতভাবে এটাকে শেষ করে দেওয়া।’ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

এদিকে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যখন করোনার প্রাদুর্ভাবের গতি রুখতে আরো জোরদার প্রচেষ্টার কথা বলছেন, তখন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট করোনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অগ্রগতির’ প্রশংসা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে গতকাল শুক্রবার নতুন আরো ৪০ হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে।

জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল যুক্তরাষ্ট্রে ৪০ হাজার ১৭৩ জন নতুন কোভিড-১৯ রোগী পাওয়া গেছে। এর আগের দিনের রেকর্ড ভেঙে এটি এখন পর্যন্ত দৈনিক সর্বাধিক সংক্রমণের রেকর্ড।

যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ২৪ লাখ মানুষ এবং প্রাণ গেছে এক লাখ ২৫ হাজারের বেশি মানুষের। বিশ্বের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে সর্বাধিক।

গতকালের ব্রিফিংয়ে হোয়াইট হাউস টাস্ক ফোর্সের পক্ষ থেকে তরুণদের করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা করানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। ১৯৮১ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে যাঁদের জন্ম, তাঁদের মধ্যে করোনার কোনো উপসর্গ না থাকলেও টেস্ট করানোর জন্য জোর আহ্বান জানিয়েছে হোয়াইট হাউস টাস্ক ফোর্স।

টাস্ক ফোর্সের অন্যতম কর্মকর্তা ড. ডেবোরাহ বার্ক্স তরুণদের শনাক্তকরণ পরীক্ষা করানো প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা এর আগে তাদের ঘরে থাকতে বলেছি। এখন আমরা তাদের টেস্ট করাতে বলছি।’

ড. বার্ক্সের বক্তব্যের পর ড. ফসি বলেন, ‘আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন, কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে আমরা গুরুতর সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি।’

‘আর, দেশের একটি অঞ্চলে যা ঘটছে, তার ক্ষতিকর প্রভাব অন্যান্য অঞ্চলেও পড়তে পারে’, যোগ করেন ড. ফসি।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার কারণ হিসেবে ড. ফসি ‘একটু আগেভাগে সবকিছু খুলে দেওয়ার’ দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। ওসব এলাকার বাসিন্দারা সতর্কতামূলক নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করছে না বলেই মনে করেন ড. ফসি।

ড. ফসি বলেন, ‘একজন থেকে আরেকজন আক্রান্ত হচ্ছে। আর এভাবে একসময় স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে, এমন কেউ আক্রান্ত হয়ে পড়বে।’

এখনই ভাইরাস উপদ্রুত অঞ্চলে করোনার সংক্রমণ বন্ধ না করা গেলে, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব অঞ্চল ভালো অবস্থানে আছে, সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান ড. ফসি।

এদিকে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়াও টেক্সাস, ফ্লোরিডা ও অ্যারিজোনা সবকিছু খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে।