রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহেদের সকল ব্যাংক হিসাব জব্দ

রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহেদ করিম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

আজ বৃহস্পতিবার এক চিঠির মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এ নির্দেশ দেয় বিএফআইইউ।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. শাহেদ/ সাহেদ/ মো. শাহেদ করিম এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহের নামে আপনার ব্যাংকে পরিচালিত সব হিসাবের লেনদেন অবরুদ্ধ করার নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

‘আগামী ৩০ দিন অবরুদ্ধ থাকবে এ সব ব্যাংক হিসাব। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ২৩ (১) (গ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা বলে এ নির্দেশ দেয়া হলো। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে’, যোগ করা হয় চিঠিতে।

চিকিৎসা সেবা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গত সোমবার বিকেল থেকে রাত অবধি উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালটির মূল কার্যালয়ে প্রথমে অভিযান পরিচালনা করেন র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখান থেকে অভিযান শেষে হাসপাতালটির মিরপুর শাখায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় হাসপাতালটির আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করা হয়।

এরপর গত মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের কোভিড ডেডিকেটেড রিজেন্ট হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয় র‍্যাব-১। এ ছাড়া উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের রিজেন্ট গ্রুপের মূল কার্যালয়ও সিলগালা করা হয়।

এদিনই রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদ করিমসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে আটক আটজনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল বুধবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যেই আজ বৃহস্পতিবার রিজেন্ট হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সাহেদ করিমের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীকে রাজধানীর নাখালপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও মালিক সাহেদকে এখনো আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে তিনি যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন সেজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি দিয়েছে।

রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি সাড়ে প্রায় চার হাজার করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে। একজন কম্পিউটার অপারেটর বসে বসে সাড়ে চার হাজার রিপোর্ট তৈরি করেছেন। মনগড়া রিপোর্ট পজিটিভ-নেগেটিভ দিয়েছেন।

তা ছাড়া মোট ১০ হাজার রোগীর করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করে রিজেন্ট হাসপাতাল। মাত্র চার হাজার ২৬৪টি নমুনা সরকারিভাবে টেস্ট করে রিপোর্ট দেয়। এ ক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রতারণার কৌশল গ্রহণ করে রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কারো জ্বর থাকলে তাকে পজিটিভ আর জ্বর না থাকলে নেগেটিভ রিপোর্ট প্রদান করে।