আর এইচ সোহেলের প্রযোজনায় ঈদে ২৬ নাটক

করোনা ভাইরাসের কারণে স্থবির পুরো বিশ্ব। অন্যান্য সেক্টরের পাশাপাশি এই মহামারির ভয়াবহ ছোবল পড়েছে বিনোদন অঙ্গনেও। ঈদুল আযহায় বছরের সবচেয়ে বেশি নাটক প্রচারিত হলেও এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন।

অন্যান্য বছর ঈদুল আযহায় প্রায় ৭শ থেকে ৮শ নাটক টেলিভিশন ও অনলাইনে প্রকাশ পেত। কিন্তু এবার করোনার কারণে সে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র একশতে। যার ফলে এখন পর্যন্ত সম্ভাব্য শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন প্রযোজক নেতারা। সাম্প্রতিককালের একজন সফল প্রযোজক আর এইচ সোহেল। নাটকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হলো তার সঙ্গে-

প্রশ্ন : কেমন আছেন?

আর এইচ সোহেল : আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো আছি।

প্রশ্ন : এবার ঈদুল আযহায় আপনার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘‘এস পি মাল্টিমিডিয়া’’ থেকে কয়টি নাটক আসছে?

আর এইচ সোহেল: সব মিলিয়ে ২৬ টির মতো নাটক দর্শক দেখতে পাবে। আশা করছি ঈদুল আযহায় বিভিন্ন চ্যানেলে নাটকগুলো সম্প্রচার হবে।

প্রশ্ন : আপনার প্রযোজনার বেশিরভাগ নাটকে নতুন নতুন অভিনয় শিল্পী দেখা যায়, কিন্তু কেন?

আর এইচ সোহেল : আজকে যে নতুন আগামীকাল কিন্তু সে পুরাতন। কাজ করতে করতে কিন্তু একজন শিল্পী এক সময় স্টার হয়। নতুনদের সুযোগ না দিলে তারা কাজ করবে কিভাবে বলুন।

প্রশ্ন : নতুনদের নিয়ে কাজ করা ঝুঁকিপূর্ণ নয় কি?

আর এইচ সোহেল : দেখুন পৃথিবীর অলঙ্কার হলো তরুণরা। আর তরুণ মানেই নতুনত্ব। পৃথিবীকে সুন্দর দেখাতে চাইলে আপনাকে তরুণদের কাছেই ফিরতে হবে। নতুনদের সুযোগ দিতে হবে, স্থান দিতে হবে। এই চরম সত্যকে যারা অস্বীকার করেন, তারা আসলে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে চান না। অন্যের তৈরি জিনিস বা অন্যের তৈরি পথে হাঁটতে চান। অন্যের তৈরি জিনিস উপভোগে কোন কৃতিত্ব নেই। পথ যারা তৈরি করে তাদেরই পৃথিবী মনে রাখে। তৈরিকৃত পথের পথিকদের মানুষ খুব কমই মনে রাখে। সুতরাং সৃষ্টিশীল যেকোন কাজে তরুণ বা নতুনদের সুযোগ দেয়ার মাধ্যমেই প্রকৃতপক্ষে সংস্কৃতি অঙ্গন সমৃদ্ধশীল হয় বলে আমি বিশ্বাস করি।

প্রশ্ন : আপনার প্রযোজনার নাটকগুলোতে কোন কোন পরিচালক কাজ করেছেন?

আর এইচ সোহেল: চন্দন চৌধুরী, হারুন রুশো, জামাল মল্লিক, আকাশ রঞ্জন, মেহেদী হাসান হৃদয়, এমদাদুল হক খান, জুয়েল হাসান, তারেক রহমানসহ অনেকে ।

প্রশ্ন : আপনি নিজেওতো পরিচালনা করে থাকেন।

আর এইচ সোহেল : মাঝে মাঝে শখের বসে পরিচালনা করে থাকি। শেষ কাজ করেছি “কালো জামাই” নামে একটি একক নাটকে।

প্রশ্ন : আপনার দৃষ্টিতে নাটকের ভবিষ্যৎ কি?

আর এইচ সোহেল: আমাদের সিনেমা শিল্প আজ ধ্বংসের মুখে। নাট্যকার, পরিচালক, প্রযোজক মিলে নাটকের শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে। তারাও কিন্তু আস্তে আস্তে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। বর্তমানে নাটকের জায়গাটার অবস্থা অনেক খারাপ।

প্রশ্ন : নতুন প্রজন্মের অভিনয় শিল্পীরা কেমন?

আর এইচ সোহেল: সবাই যার যার জায়গা থেকে ভালো কিছু দিতে চেষ্টা করছে। তার মধ্যে কিছু শিল্পী নাটকের গল্পে মনোযোগ না দিয়ে ফেসবুকে ছবি দেওয়া, লাইক কমেন্ট নিয়ে ব্যস্ত থাকে । তাদের চিন্তাই থাকে কিভাবে ফ্যান-ফলোয়ার বাড়ানো যায়।

প্রশ্ন: সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তনে নাটক কতটা ভূমিকা রাখতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

আর এইচ সোহেল : অর্থ উপার্জন করাই নাটকের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নয়। অবশ্যই নাটক সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তনে অনেক সাহায্য করতে পারে। তবে তার জন্য আমাদের সবার সদিচ্ছার প্রয়োজন।

 সাক্ষাৎকার : রাজীব মণি দাস