করোনা থেকে বাঁচতে বিশ্বের ধনীরা নিরাপদ আবাসন খুঁজছেন!

‘বিশ্ব মহামারী অনেক কিছুই বদলে দিচ্ছে। মানুষ নানা সংকটে পড়লেও বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা হ্রাস পায়নি বরং বেড়েছে। কিন্তু তাদের অগাধ অর্থবিত্ত থাকা সত্ত্বেও কোভিড-১৯ মোকাবেলায় দেশগুলো অনেকটা ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ার ফলে নিজেদের জীবন নিয়ে সংকটে।

সূত্র : হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স 

এই অবস্থায় বিশ্বের ধনী ব্যক্তিরা দুর্গম ও বালুকাময় সমুদ্রসৈকত সমৃদ্ধ দেশগুলোতে আশ্রয় খুঁজছেন, যেখানে কোভিড-১৯ ভাইরাসের জন্য ঝুঁকিহীন ও জীবনের জন্য নিরাপদ। এর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের আশপাশের দেশগুলোতে বেশি পছন্দ তাদের। সেসব দেশে বসবাস, পড়ালেখা, বাণিজ্যের সুযোগ-সুবিধার জন্য তারা অর্থ ব্যয় করতে রাজি আছেন।

বিশ্বের বৃহত্তম রিয়েল স্টেট পরামর্শক সংস্থা হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স এমনই তথ্য দিচ্ছে।

সংস্থাটি বলছে, ২০১৯ সালের তুলনায় গত চার মাসে এমন আগ্রহী ধনীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স  এর মতো সংস্থাগুলোর সাহায্যে সেসব দেশগুলোতে বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব বা আবাসনের গ্যারান্টিযুক্ত প্রোগ্রামগুলোতে সম্পৃক্ত হতে পারেন ধনীরা। সংস্থাটি বিশ্বের  ধনী ব্যক্তিদের নিরাপদ  আবাসন কিনতে সহায়তাও করছে।

এক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডে বসবাস, কাজ বা পড়ালেখা করার অধিকার অর্জন করতে পারেন যদি কেউ ৩ মিলিয়ন নিউজিল্যান্ড ডলার বা ১০ মিলিয়ন ডলারের অংশীদার হন,  তবে এটা নির্ভর করে আপনি যে ধরনের বিনিয়োগকারী আবাসিক ভিসা নিতে চান তার ওপর।

আর মাল্টায় সম্পত্তি ক্রয়সহ বিবাহিত দম্পতি নাগরিকত্ব পেতে প্রায় ১.২ মিলিয়ন ইউরো থাকতে হবে।

ধনাঢ্য ব্যক্তিরা কেবল ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বালুকাময় সৈকগুলোতে আইসোলেশনের জন্য নয় বরং অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছেন, যে দেশগুলো মূলত কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বিশ্বকে মুগ্ধ করেছে তাদের দিকেই বেশি আগ্রহী তাদের।

সম্প্রতি পর্তুগালের আবাসন-বিনিয়োগ কর্মসূচির প্রতিও আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটিতে স্থিতিশীল রিয়েল এস্টেট বাজারে বিনিয়োগে  ক্লায়েন্টদের আকৃষ্ট করছে।

হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স এর হেড অব সেলস ডমিনিক ভোলেক তার গ্রাহকদের উদ্দেশে  বলছিলেন, তারা এখন উপলব্ধি করছেন: আসুন আমরা বাস্তবায়নের জন্য এই দৈবপরিকল্পনাটি করি।

আইন সংস্থা ফ্রেগমেনের ব্যবস্থাপনা অংশীদার নাদাইন গোল্ডফুট বলেন, এই মহামারী ধনী ব্যক্তিদেরকে এমন পদক্ষেপের দিকে ধাবিত করেছে। মূলত মহামারী কোন সরকার কীভাবে মোকাবেলা করেছে এবং পদক্ষেপ নিয়েছে তা এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভ্রমণের সাথে সম্পৃক্ত ব্যবসা যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেখানে হেনলির মতো রিয়েল স্টেট প্রতিষ্ঠানগুলো আরও প্রসারিত হচ্ছে। যেমন হেনলি সম্প্রতি নাইজেরিয়ায় একটি অফিস প্রতিষ্ঠা করেছে এবং শিগগিরই ভারতেও চালু করবে, যেখানে ভাইরাসজনিত সমস্যার কারণে ধনী ব্যক্তিরা নিরাপদ দেশে পালিয়ে যাবার চিন্তা করছেন তাদের সহযোগিতার জন্য তারা এসব করছেন।

ফ্রেগমেনের গোল্ডফুট বলছেন, ভাইরাসজনিত কারণে মূলত ধনী ব্যক্তিরা নিজেদের অর্থ ব্যয় করে এখন নিরাপদ কোনো জায়গায় থাকতে চায়, যেখানে ভাইরাসসহ সার্বিক পরিস্থিতি উন্নত।,